নেত্রকোনার কলমাকান্দায় রাজীব তালুকদার (৩৮) নামে এক যুবকের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দীপ ভৌমিক (২৭) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের রাস্তার পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে অসংখ্য ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর দ্রুত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্পর্শকাতর একটি বিষয় নিয়ে প্রতিশোধ নিতেই রাজিবকে হত্যা করে দীপ ভৌমিক। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছে দীপ। পরে তার দেওয়া তথ্যে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তাক্ত জামাকাপড় উদ্ধার করা হয়।

নিহত রাজিবের পরিবারের লোকজন জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে একটি ফোন কলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান রাজিব। পরে সকালে গোবিন্দপুর গ্রামের একটি মাটির রাস্তার পাশে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী।

কলমাকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত রাজিব উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের বাউসারী গ্রামের রামকৃষ্ণ তালুকদারের ছেলে।

আটক কৃত দ্বীপ চন্দ্র ভৌমিক (২৫) একই গ্রামের নিবারণ চন্দ্র ভৌমিকের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজীব এলাকায় চুরি করে বেড়াত। তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা রয়েছে। এছাড়া এলাকার মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতো। দীপ ভৌমিকের স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে রাজিবের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিশোধ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাতে রাজিবকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে লাশ গ্রামের নির্জন এলাকায় ফেলে রাখে। সকালে এলাকার লোকজন লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন আরও জানান, লাশ উদ্ধারের পরপরই সন্দেহজনকভাবে দীপ ভৌমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে দীপ জানায়- তার স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল রাজিব। বিষয়টি জানার পর রাজিবের ওপর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা করে দ্বীপ। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইল ফোনে কল করে রাজিবকে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।

তিনি আরও বলেন, দ্বীপের দেখানো জায়গা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভুক্তভোগীর পরিবার।